dailydinlipi24 দৈনিক দিনলিপি ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১০:২১ পিএম
সংবিধান অমান্যকারী শেখ হাসিনার অপসারণের দাবী আমরা ছাড়া কেউ করেনি।
আমরা ৩০ জানুয়ারী ২০২১ থেকে ১৭ জুলাই ২০২৪ পথসভা/ রোডমার্চ করেছি।
শেখ হাসিনা চিরকাল ক্ষমতায় থাকার লক্ষ্যে ২০১১ সালে জাতীয় সংসদে হা-না ভোটে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করিয়ে রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণরূপে নিজ দখলে নিয়ে নেন। কিন্তু ঐ সংশোধনী ঐ সময়ে সংবিধানের ধারা ১৪২ (১ক) দফার নির্দেশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পূর্বে ‘গণভোট’ নিয়ে হয়নি, বিধায় অবৈধ। শেখ হাসিনার পতনের পর এই প্রশ্নে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে, কিন্তু বাতিল করা হয়নি কেন?
[ধারা ১৪২ (১ক) (১) দফায় যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্বেও এই সংবিধানের প্রস্তাবনার অথবা ৮, ৪৮ [বা] ৫৬ অনুচ্ছেদ অথবা এই অনুচ্ছেদের কোন বিধানাবলীর সংশোধনের ব্যবস্থা রহিয়াছে এইরূপ কোন বিল উপরি-উক্ত উপায়ে গৃহীত হইবার পর সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট উপস্থাপিত হইলে উপস্থাপনের সাত দিনের মধ্যে তিনি বিলটিতে সম্মতিদান করিবেন কিনা এই প্রশ্নটি গণভোটে প্রেরণের ব্যবস্থা করিবেন।]
[ঐ সময়ে সংবিধানের ফুটনোটে দেয়া ব্যাখ্যাঃ-ধারাটি জাতীয় সংসদে সকল দলের সম্মতিতে গৃহীত সংবিধান (দ্বাদশ সংশোধন) আইন ১৯৯১, (১৯৯১ সালের ২৮ নং আইন)-এর ১৯(ক) ধারাবলে স্থাপিত।]
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ কারুর বাপের সম্পত্তি নয়। এই দেশ সর্বজনের। সংবিধান তার দলিল। কিন্তু শেখ হাসিনা জাল দলিল দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে ৫ জানুয়ারী ২০১৪ বিনা ভোট, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ভোট ডাকাতি ও ৭ জানুয়ারী ২০২৪ ‘ডামী প্রার্থী’র সাজানো নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকেন। তিনি রাষ্ট্রের সম্পদ লুটপাট করে অধ্যাপক, সংস্কৃতিকর্মী, ব্যবসায়ী ও অনুগত রাজনীতিকদের সুবিধাভোগী শ্রেণী তৈরি করেন। তিনি চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশকে ভারতের ‘দেশীয় রাজ্য’এ পরিণত করেন। আমরা ৩০ জানুয়ারী ২০২১ থেকে তাঁর বিদায় ও গণতন্ত্রের দাবীতে লিফলেট বিতরণ করে আসছি।
উল্লেখ্য যে, শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই গণপ্রতিনিধিত্ব আইনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১% ভোটারের প্রকাশ্য অগ্রীম স্বাক্ষরের ১২(৩)এ ধারা এবং দল নিবন্ধনের নিপীড়নমূলক ৯০বি(১)এ৩ ধারা অন্তর্ভুক্ত করেন। এর ফলে রাজনীতিতে ভিন্নমত পোষণের, নতুন দল গড়ে তোলার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। আমরা এই ধারা দু’টি বাতিল সহ ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৭ দফা রোডম্যাপ প্রস্তাব করেছি।
বিগত ৫ আগস্ট ২০২৪ এক গণবিদ্রোহে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। ৮ আগস্ট ডঃ ইউনুস এর নেতৃত্বে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ ক্ষমতা নিয়েছে। কিন্তু তাঁর সরকার ‘ছাত্রদের দ্বারা নিয়োজিত’ অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত বিধায় দুর্বল। বাংলাদেশে জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে এখুনি যা’যা’ করা দরকারঃ
১। শেখ হাসিনার সর্বময় ক্ষমতার ‘পঞ্চদশ সংশোধনী’র ‘জাল সংবিধান’ বাতিল করুন।
২। সহজশর্তে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন দিন; স্বতন্ত্রদের ১% অগ্রিম ভোট বাতিল করুন।
৩। বর্ষার শুরুতে কাজ/অপচয় করা বন্ধ করতে অর্থবছর ১ এপ্রিল-৩১ মার্চ করুন।
৪। যে নামেই হোক, দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দলীয় ছাত্র রাজনীতি মুক্ত করুন।
৫। সরকারী বেসরকারী দেশের সকল প্রতিষ্ঠান দলীয় শ্রমিক রাজনীতি মুক্ত করুন।
৬। প্রতিষ্ঠানপ্রধান/ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিজস্ব ক্যাডার থেকে নিয়োগ দিন।
৭। সংবিধান সংস্কারের নির্বাচন করতে ‘জাতীয় সরকার’ এর কাছে ক্ষমতা দিন।
-প্রকৌশলী ম ইনামুল হক, আহবায়ক, দেশপ্রেমিক মঞ্চ জাতীয় কমিটি