জাতীয়

ডাঃ এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাবেক রাষ্ট্রপতি সফল রাজনীতিবিদ ও চিকিৎসক

  dailydinlipi24 দৈনিক দিনলিপি ৩ অক্টোবর ২০২৪ , ১১:৩৮ পিএম

এ.কিউ.এম (আবুল কাসেম মোহাম্মদ) বদরুদ্দোজা চৌধুরী একজন সফল রাজনীতিবিদ  চিকিৎসক ও সাবেক  রাষ্ট্রপতি।

 

সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত…..

এ.কিউ.এম (আবুল কাসেম মোহাম্মদ) বদরুদ্দোজা চৌধুরী    (জন্ম ১ ১ নভেম্বর ১৯৩২) একজন  রাজনীতিবিদ ও চিকিৎসক।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০০১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ক্ষমতায় আসার পর তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন।

 

 

এর কিছুদিন পর ২০০১ সালের নভেম্বর মাসে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক। এছাড়া তিনি একজন লেখক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, উপস্থাপক এবং সুবক্তা। ২০০২ সালে সৃষ্ট এক বিতর্কিত ঘটনার জের ধরে তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে স্ব ইচ্ছায়  পদত্যাগ করেন।

পরবর্তীকালে আরেকটি রাজনৈতিক দল বিকল্প ধারা বাংলাদেশ গঠন করেন।

বাংলাদেশের ১৪তম রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ ১৪ নভেম্বর ২০০১ – ২১ জুন ২০০২
প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া
পূর্বসূরী শাহাবুদ্দিন আহমেদ
উত্তরসূরী জমিরুদ্দিন সরকার (ভারপ্রাপ্ত)
ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭৯ – ১৯৮২
পূর্বসূরী. এম কোরবান আলী
উত্তরসূরী. শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন
মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৯১ – ২০০২
পূর্বসূরী. শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন
উত্তরসূরী. মাহি বি চৌধুরী

ব্যক্তিগত বিবরণ…
জন্ম ১ নভেম্বর ১৯৩২ (বয়স ৯১)
মুন্সেফ বাড়ি, কুমিল্লা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ইন্ডিয়া
(বর্তমানে বাংলাদেশ)
রাজনৈতিক দল
বিকল্প ধারা বাংলাদেশ
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
(১৯৭৮–২০০২)
দাম্পত্য সঙ্গী হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরী
সন্তান….
মাহি বি চৌধুরী
পিতা. কফিল উদ্দিন চৌধুরী (পিতা)

প্রাক্তন শিক্ষার্থী
ঢাকা কলেজ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ

পুরস্কার
স্বাধীনতা পুরস্কার ১৯৯৩

প্রারম্ভিক জীবন….

বদরুদ্দোজা চৌধুরী নভেম্বর ১, ১৯৩২ সালে কুমিল্লায় তার মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সেইন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল থেকে ১৯৪৭ সালে ম্যাট্রিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৪৯ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হতে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। বদরুদ্দোজা চৌধুরী লন্ডনে অবস্থিত কারফিউ এন্ড এডিনবার্গ থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাবা প্রয়াত কফিল উদ্দিন চৌধুরী ছিলেন একজন প্রতিষ্ঠিত ও খ্যাতনামা আইনজীবী। এছাড়াও তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের মন্ত্রী। জনাব বি.চৌধুরী তার নানাবাড়ি কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন।

 

 

তার শিক্ষাজীবন কাটে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সেইন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও লন্ডন, এডিনবরা ও গ্লাসগো রয়াল কলেজ এ। সেইন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি মাধ্যমিক পাস করেন মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থেকে। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে বিদেশে উচ্চতর অধ্যয়নের জন্য নির্বাচিত হন।

জনাব বদরুদ্দোজা  চৌধুরী তার কর্মজীবন শুরু করেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সবচাইতে নবীন অধ্যাপক হিসেবে।

তিনি স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং ষাটের দশকের শেষের দিকে জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান “আপনার ডাক্তার” এর উপস্থাপক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তিনি ১৯৭৭ সালে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জিয়াউর রহমান এর সরকারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন।

জাতীয়তাবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ১৯৭৯ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।

রাজনৈতিক জীবন, ১৯৭৫-১৯৮১

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ছিলেন। এপ্রিল ১৫, ১৯৭৯ সালে তিনি জিয়াউর রহমান সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। এসময় তিনি স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ড. চৌধুরী একজন প্রবীণ রাজনৈতিক ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী।

 

তিনি বিএনপির মনোনয়নে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নিজ নির্বাচনী এলাকা মুন্সীগঞ্জ ১ আসন (সিরাজদিখান-শ্রীনগর) থেকে।

বিভিন্ন সময়ে বিএনপির পাঁচবারের শাসনামলে তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সংস্কৃতি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিএনপির জয়লাভের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান ও পরবর্তীকালে ১৪ নভেম্বর ২০০১ এ তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব লাভ করেন ও পদত্যাগের আগ পর্যন্ত (২১ জুন, ২০০২) দায়িত্বে বহাল ছিলেন।

 

পদত্যাগের পর তিনি বিকল্প ধারা বাংলাদেশ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন ও এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অদ্যাবধি তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

ব্যক্তিগত জীবন ও সম্মাননা…

ড. চৌধুরী ব্যক্তিগত জীবনে হাসিনা ওয়ারদা চৌধুরীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি এক পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক। তার পুত্র মাহি বি চৌধুরী তরুন রাজনৈতিক ও টিভি ব্যক্তিত্ব। তার বড় মেয়ে ব্যারিস্টার মুনা চৌধুরী পেশায় একজন আইনজীবী ও ছোট মেয়ে ডাঃ শায়লা শারমিন চৌধুরী পেশায় একজন চিকিৎসক।

 

জনাব বদরুদ্দোজা  চৌধুরী রাজনীতি ও সমাজ উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৩ সালে দেশের সর্ব-উচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা পদক লাভ করেন। শ্রেষ্ঠ টিভি উপস্থাপক হিসেবে তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন পুরস্কারও লাভ করেন।